ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মেঘনা উপকূলীয় জেলে পল্লীতে বিরাজ করছে দুর্দিন। অর্ধাহার ও অনাহারে কাটছে জেলে পরিবারের জীবন। মন ভরা আশা নিয়ে ধার দেনা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মেঘনার উত্তাল তরঙ্গে ইলিশ আহরণে তাদের মাছ ধরার নৌকা বা ট্রলার নিয়ে দিনরাত রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে কঠোর পরিশ্রম করেও আশার ফলন ঘটাতে পারেনি তারা।
আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন এ ৪ মাস মেঘনা ইলিশ আহরণের পুরো মৌসুম। কিন্তু এ বছর তাদের ইলিশ ধরা জালে আশানুরূপ রূপালী ইলিশ ধরা না পড়ায় এ দুর্দিন চলছে তাদের পরিবারে। আশায় আশায় জেলেদের মৌসুম পেরিয়ে চললেও ঘাটের দাদন দাতা মহাজনদের ঋণের ভারী বোঝা তাদের পিছু ছাড়ছে না মোটেও।
তাই তাদের চেহারায় দুশ্চিন্তার ছাপ ফুটে উঠেছে। এদিকে মহাজনদের ঋণের টাকা, জেলেঘাটের দোকানীদের বকেয়া পাওনা অন্যদিকে সাংসারিক জীবনের অভাব অনটন যেন তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে তাদেরকে চরম দুঃখ কষ্টে ফেলে দিয়েছে। উপজেলা সাম্রাজ, মাইনুদ্দিন ঘাট, পাঁচ কপাট, আট কপাট, ঢালচর ও কচ্চপিয়া জেলেঘাটের একই চিত্র বিরাজ করছে।
মোহাম্মদ নূরে আলম মাঝি জানান, আমি অনেক কষ্ট করে শেষ মৌসুমে ইলিশের আশায় দিন করে আমার মাছ ধরার ট্রলারটি মেঘনায় পাঠালেও কোন প্রকার ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারি নাই। সামনে মেঘনা ইলিশ ধরা নিষেধের (অবরোধ) অভিযান শুরু হবে।
এদিকে মাইনুদ্দিন ঘাটের ইউনুস জানান, আমরা বেরি বাধে থাকি মেঘনায় ইলিশ ধরাই আমাদের কাজ, কিন্তু এই বছর ইলিশ না পাওয়ায় বহু কষ্টে সংসারে ছেলে-মেয়ে ও মা-বাবাদেরকে নিয়ে জীবন কাটাচ্ছি।
বাংলাদেশ সরকার জেলেদের জন্য জেলে কার্ডের মাধ্যমে সহায়তা দিলেও তা অসাধু জনপ্রতিনিধিদের সঠিক বিবেচনা না থাকায় আমরা তা থেকেও বঞ্চিত হয়ে গিয়েছি। সংশ্লিষ্ট সহায়তা প্রদানকারী ব্যক্তিরা প্রকৃত জেলেদের প্রাপ্য সঠিকভাবে বিতরণ করলে কিছুটা হলেও জেলেদের দুঃখ দুর্দশা লাঘব হবে বলে দাবি জেলেদের।
টিএইচ